শরণখোলা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস ও তথ্য
তথ্য সংগ্রহ ও গবেষনায়
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর জববার
সহকারী কমান্ডার (দপ্তর), শরণখোলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
ঠিকানাঃ গ্রাম- রাজৈর, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এনসাইক্লোপিডিয়া
শরণখোলা উপজেলা ১৯৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ
উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিঃ
শরণখোলা উপজেলা এলাকায় ১৯৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিঃ- ১৯৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপট তৈরীতে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য ঘটনাবলির প্রভাব পূর্ব বাংলার সকল জেলা উপজেলার গ্রাম গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান/১৯৭০ এর জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে অভূতপূর্ব বিজয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষন, ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ও পিলখানা ইপিআর ক্যাম্পে হামলা, হত্যা, ঘুমন্ত নিরস্ত্র ঢাকাবাসীর উপর গণহত্যা, ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার মাধ্যমেই সরাসরি হানাদার প্রতিরোধ মুক্তিযুদ্ধ শুরু। পূর্ব বাংলার দক্ষিণ অঞ্চল সুন্দরবন কোলঘেষা শরণখোলা উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরীতে তৎকালীন এ অঞ্চলের এম.এন.এ আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা শেখ আঃ আজিজ সাহেবের স্বাধীনতা কামী জনগনদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য অনুপ্রেরণাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি। এম.পি. আঃ লতিফ খান এর ভূমিকাও ছিল স্মরণযোগ্য, স্থানীয় সংগ্রাম কমিটির লোকজন দের মুক্তিযুদ্ধের জন্য নিদের্শনা ও সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে ৩ মার্চ শরণখোলা রায়েন্দা স্কুল মাঠে ন্যাপ নেতা মাওলানা আঃ হামিদ খান ভাসানী জনসভায় তার বক্তব্যে বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানীদের সাথে আর নয়, এবার এক দফা স্বাধীনতা। মুলত জাতীয় ইস্যুগুলির প্রভাব ও এম.এন.এ শেখ আঃ আজিজ ও এম.পি আঃ লফিত খান দ্বয় এর এ অঞ্চলের মুক্তিকামী জনগনদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ করা এবং পশ্চিম পাকিস্তানের বৈশম্যমূলক আচরন, শোষন, বঞ্চনা, অন্যায় এর বিরম্নদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট।
মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ত্ততি ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুযাই মাতৃভূমি হানাদার মুক্ত করার প্রতিরোধও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ত্ততি অত:পর শরণখোলা উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র রায়েন্দা বাজার পাইলট হাইস্কুল মাঠে সংগ্রাম পরিষদের নেতা কর্মীরা বাঁশের লাঠি (প্রথম পর্যায়ে) নিয়ে শারীরিক প্রশিক্ষণ শুরম্নর একদিন পরেই রায়েন্দা বাজারের কাঠ মিস্ত্রী মোতাহার মিয়া কাঠ দিয়ে রাইফেল তৈরী করে দেয়, এই নিয়ে প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধ প্রস্ত্ততি। ইতোমধ্যে সম্ভব্য এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি মেজর জিয়াউদ্দিন শরণখোলা (রায়েন্দা) এসে শরণখোলা থানা থেকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য অস্ত্র রাইফেল, গোলাবারম্নদ এনে সংগ্রাম কমিটির নেতাদের ভাগ ভাগ করে দিয়ে মুক্তিবাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও সুন্দরবন ভিত্তিক মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে, অস্ত্র সংগ্রহের জন্য চলে যান। অল্প দিনের মধ্যে অস্ত্র গোলা বারম্নদ ও মুক্তিবাহিনীর একটি দল নিয়ে সুন্দরবনে আসেন এবং মুক্তিবাহিদের যুদ্ধ প্রশিক্ষণ দেয়া শুরম্ন করেন অত:পর এই শরণখোলা সুন্দরবন অঞ্চলে বিশাল মুক্তিবাহিনী দল ও ঘাঁটি গড়ে তোলেন।
মুক্তিবাহিনীর প্রথমিক প্রতিরোধঃ
শরণখোলা উপজেলায় ৪টি ইউনিয়ন ১নং ধানসাগর, ২নং খোমত্মাকাটা, ৩নং রায়েন্দা, ৪নং সাউথখালী- এই চারটি ইউনিয়নে সংগ্রাম কমিটির সিদ্ধামত্ম অনুযাই নিজস্ব বন্দুক ও লাঠিসোটা নিয়ে সুযোগ সন্ধানী লুটেরাদের প্রতিরোধ বিশেষ করে হিন্দু বসতি এলাকায় জন শত্রম্নর বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধ শুরম্ন হয়। শহীদ সেনা সদস্য ক্যাডেট অফিসার আনোয়ার হোসেন, আঃ আজিজ ফুল মিয়া সুবেদার দ্বয় এর নেতৃত্বে একটি দল গঠন হয়। বগী সুন্দরবন এলাকায় এরা নিজস্ব উদ্যোগে ফরেস্ট অফিসের বনরক্ষীদের নিকট থেকে অস্ত্র সংগ্রহ ও দেশীয় বন্দুক ব্যবহার করেন। ধানসাগর রাজাপুর এলাকায আঃ গফ্ফার সুবেদার এর নেতৃত্বে একটি মুক্তিবাহিনী দল গঠন হয়। খোমত্মাকাটা, ধানসাগর সামছুল আলম তালুকদার, এম.এ কাদের, এম আফজাল হুসাইন, নজরুল ইসলাম লাল, ইসাহাক আলী সরদার এদের নেতৃত্বে একটি মুক্তিবাহিনী দল গঠন হয়। সাউথখালী তাফালবাড়ী মোজাম্মেল হোসেন, সামুছুল হক বেপারী, এ্যাড. লুৎফর রহমান, শেখ সামছুর রহমান, আলী হোসেন এদের নেতৃত্বে একটি মুক্তিবাহিনী দল গঠন হয়। রায়েন্দা ডাঃ মোছলেম উদ্দিন , আঃ ছত্তার, মোদাচ্ছের আলী এদের নেতৃত্বে একটি মুক্তিবাহিনী দল গঠন হয়। [এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি মেজর অব: জিয়া উদ্দিন মুক্তিবাহিনীর একটি দল নিয়ে রায়েন্দা আসে এবং থানা থেকে রাইফেল, গোলাবারুদ এনে ভাগ করে দেয় এবং মুক্তি বাহিনী দল গঠনের জন্য পরামর্শ দেন, সকল সুযোগ সন্ধানী লুটেরা ডাকাত ও জন শত্রুদের প্রতিরোধের নির্দেশ দেন।]
উপজেলায় পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনীর অনুপ্রেবেশ ও ক্যাম্প স্থাপনঃ
শরণখোলা উপজেলায় (তৎকালিন থানা) সর্ব প্রথম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ৭১ এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহেই গানবোট নিযে আসে শরণখোলার প্রাণ কেন্দ্র রায়েন্দা বাজার বলেশ্বর নদীতে। এই পাঞ্চাবী গান বোট নদী পথে বরিশাল হয়ে আসে ঝালকাঠি, কাউখালী, হুলারহাট, তুষখালী বিভিন্ন জায়গায় অপারেশন করে রায়েন্দা আসে হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়ায় রায়েন্দা বাজারে অর্থাৎ তীরে না উঠে রায়েন্দা খাল ও নদীতে কতক্ষন টহল দিয়ে আবার বরিশালের উদ্দেশ্যে চলে যায়। তখন পাঞ্জাবী গানবোট আসতে দেখে আওয়ামীলীগ ও সংগ্রাম কমিটির লোকজন এবং হিন্দু পরিবার গুলো আত্মগোপনে যায়। এই ফাঁকে কিছু হিন্দু পরিবারের ঘর বাড়ি লুট পাট হয়।
অত:পর শরণখোলার ৭১’ এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে গানবোট প্রথম অনুপ্রবেশ ঘটে। তখন কোন ক্যাম্প স্থাপন করে নাই। ১ জুন’৭১ পাঞ্জাবী বাহিনীর নেতৃত্বে রাজাকার দের নিয়ে শরণখোলা থানার দোতলা বিল্ডিং এ ক্যাম্প স্থাপন করে। রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের দোতালায় ছোট একটি সেন্টি ক্যাম্প স্থাপন করে। অবশ্য জুলাই মাসের শেষ দিকে রায়েন্দা বাজারস্থ আওয়ামীলীগ নেতা নাছির উদ্দিন আকনের দোতলা বিল্ডিং দখল করে রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর যৌথ ক্যাম্প স্থাপন করে যেখানে পাঞ্চাবী সহ অনেক বেশী সংখ্যক শত্রু বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি স্থাপন করে।
উপজেলায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সহযোগী রাজাকার/ আল-বদর/আলশামস বাহিনী গঠন ও তৎপরতাঃ
পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনীর সহযোগি রাজাকার আল-বদর বাহিনীর সংখ্যা স্থানীয়ভাবে আরো বৃদ্ধি করে। এলাকায় নরকীয় তান্ডব শুরু করে- লুটপাট, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, মানবতা বিরোধী কর্মকান্ড চালাইতে থাকে।
শরণখোলা থানার রাজাকার- রাজাকার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা এ.কে.এম ইউসুফ এর নির্দেশে ১৯৭১ সালে শরণখোলার আওয়ামীলীগ ও ভাসানী ন্যাপ তথা সংগ্রাম কমিটির নেতাদের ঘর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করার পরিসংখ্যান
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এ.কে.এম ইউসুফ মাওলানার রাজাকার বাহিনী শরণখোলা থানার রায়েন্দা বাজারে ক্যাম্প করে অবস্থান নেয় এবং প্রথমেই ইউসুফ মাওলানার নির্দেশে এ অঞ্চলে আওয়ামীলীগ ও ভাসানী ন্যাপ তথা সংগ্রাম কমিটির নেতাদের এবং মুক্তিবাহিনী সংগঠিতকারী সকল নেতাদের ঘর বাড়ি পোড়ায়। যেমন ২নং খোন্তাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও সংগ্রাম কমিটির নেতা মাস্টার মফিজুল হক এর ঘর ভাংচুর করে এবং তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হকের ঘর পোড়ায়, সংগ্রাম কমিটির নেতা ও ভাসানী ন্যাপ নেতা মুক্তিযোদ্ধা সামছুল আলম তালুকদার এর ঘর পোড়ায়। রাজৈর গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা মহসিন উদ্দিন তালুকদার এর ঘর ভাংচুর-লুটপাট এবং লাইসেন্স কৃত বন্দুক নিয়ে যায়। রাজৈর গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা মাস্টার সামছুর রহমান তালুকদার এর ঘর ভাংচুর-লুটপাট এবং লাইসেন্স কৃত বন্দুক নিয়ে যায়। সংগ্রাম কমিটি ও ভাসানী ন্যাপ নেতা মুক্তিযোদ্ধা এম.এ কাদের, কেশব চন্দ্র হালদার নলবুনিয়া এবং মুক্তিযোদ্ধা কেশব চন্দ্র বেপারী বানিয়াখালী ঘর পোড়ায়। ১নং ধানসাগর ইউনিয়নে সংগ্রাম কমিটির নেতা মুক্তিযোদ্ধা এম আফজাল হুসাইন, সংগ্রাম কমিটি ও ভাসানী ন্যাপ নেতা মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম লাল এবং মুক্তিযোদ্ধা সদানন্দ হালদার এর ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা একেএম হাবিবুর রহমান এবং তার ছোট ভাই ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা মুক্তিযোদ্ধা একেএম মনিরুজ্জামান বাবুল এর যৌথ ঘরটি পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা আঃ রব ধলুর ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেক জমাদ্দারের ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা আঃ খালেক বেপারীর ঘর ভাংচুর করে ও মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমানের ঘর পোড়ায়।
৩নং রায়েন্দা ইউনিয়নে সংগ্রাম কমিটি ও আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মোছলেম উদ্দিন জমাদ্দার এর ঘর পোড়ায়। সংগ্রাম কমিটি ও আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা আঃ ছত্তার চাপরাশির ঘরে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। মুক্তিযোদ্ধা আঃ আজিজ খানের ঘর পোড়ায়, মুক্তিযোদ্ধা আঃ রশিদ সরদারের ঘর পোড়ায়, মুক্তিযোদ্ধা আঃ রফিজ উদ্দিন-এর ঘর পোড়ায়, মুক্তিযোদ্ধা মোদাচ্ছের আলীর ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বাদশার রায়েন্দা বাজারস্থ বসত ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে।
৪নং সাউথখালী ইউনিয়নে সংগ্রাম কমিটি ও আওয়ামীলীগ নেতা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সামছুল হক বেপারীর ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্য ফুল মিয়া সুবেদারের ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী সিকদার এর ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্য আবু হানিফ মোল্লার ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা আঃ হালিম খন্দকার এর ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা সামছু মুন্সির ঘর পোড়ায়, মুক্তিযোদ্ধা আলী খান এর ঘর পোড়ায়, মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত খানের ঘর পোড়ায়। মুক্তিযোদ্ধা সায়েদ খান ও আনোয়ার হোসেনের ঘর পোড়ায়। এছাড়া ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা মুক্তিযোদ্ধা শেখ সামছুর রহমানের বাবার পাকা দালানে আগুন দেয় এবং ভাংচুর করে, মুক্তিযোদ্ধা আঃ মজিদ ফকিরের ঘর পোড়ায়, মুক্তিযোদ্ধা মমিন জোমাদ্দারের ঘর পোড়ায়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, শরণখোলা থানা অঞ্চলের প্রায় সকল হিন্দু পরিবারের বাড়ি ঘর লুটপাট ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে মানবেতা বিরোধী রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা একক কিংবা যৌথভাবে।
শরণখোলা থানার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে রাজাকার হানাদার কর্তৃক গণ হত্যার চিত্র
শরণখোলা থানা সদর রায়েন্দা বাজারে একেএম ইউসুফ মাওলানার নিয়ন্ত্রিত রাজাকার বাহিনী ক্যাম্প গঠন করার পরই প্রথম একেএম ইউসুফ মাওলানার পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী পরিকল্পনা নেয় যে, এলাকার সকল হিন্দুদের ঘর বাড়ি মালামাল গণিমতের মাল হিসাবে লুটে নেয়া, হিন্দু নারীদের সম্ভ্রমহানী করা, পুরুষ হিন্দুদের হত্যা করা, মুক্তিবাহিনী হত্যা ও ধর্মান্তর করা এবং মুক্তিবাহিনীদের সহযোগিদের হত্যা করাসহ জয় বাংলাধারীদের ঘর বাড়ি লুট ও অগ্নিসংযোগ করা। পরিকল্পনা অনুযায়ী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে খোন্তাকাটা, বানিয়াখালী, নলবুনিয়া, ধানসাগর-বাধাল, মালসা, আমড়াগাছিয়া এই অঞ্চলে অপারেশনে যায়। কিন্তু আগেই খবর পেয়ে অধিকাংশ হিন্দুরা আত্মগেপনে যায়। যারা পালাতে পারেনি তাদের রাজাকাররা ধরে এনে বাধাল রাস্তার মোড়ে পোলের গোড়ায় গুলি ও জবাই করে হত্যা করে। এরা হলো বাধাল গ্রামের গোপাল হালদার, বানিয়াখালী গ্রামের বিধান বালা এবং নলবুনিয়া গ্রামের বিমল গাইন।
জুন মাসের শেষ সপ্তাহে রায়েন্দার রাজাকাররা গণহত্যা চালায়- লাকুড়তলা, কদমতলা গ্রামে অটল বিহারী কুলু, মনোরঞ্জন কুলু, ভোলানাথ হালদার, মহানন্দ সমাদ্দার, কলম সাধক, বিমল সাধক প্রমুখকে গুলি করে হত্যা করে। অটল বিহারী কুলুর মা পুত্রকে গুলি করার সময় সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এবং রাজাকাররা তাকে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাতকরে এবং সেই আঘাতেই সে মারা যায়।
জুন মাসের শেষ দিন, রায়েন্দার রাজাকারদের বড় একটি দল লুটপাট ও গণহত্যার তান্ডব চালায়, রাজেশ্বর ও লাকুড়তলা রাজাপুর গ্রামে অপারেশন চালায়, রাজেশ্বর গ্রামের গোপাল হালদার, ক্ষিরোধ কুলু, মনোহর কুলু, কুঞ্জ বেপারী, রাজাপুর গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথ মন্ডল, কেরামত আলী হাং এবং লাকুড়তলা গ্রামের যতীন্দ্রনাথ দেরকে গুলি কর লাশগুলো নদীতে ও খালে ভাসিয়ে দেয়।
এছাড়া রাজাপুর, শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ রাজাকার, আলবদর ও পাকিস্তানি হানাদারের গ্রাম নিধন অভিযানের সময় প্রায় ২০ জন নিরীহ জনসাধারণ হত্যা করে এবং বহু নারী ধর্ষিত হয়। গণহত্যার শিকার রাজাপুর গ্রামের আঃ গণি আকন ও তার পুত্র নুরুজ্জামান আকন, মোজাম্মেল হক আকন, সেকেন্দার আলী খান, মোঃ কাসেম হাওলাদার। মাঠে কাজ করা অবস্থায় ৮ জন কৃষককে রাজাকারের দল গুলি করে হত্যা করে। এর মধ্যে রাজাপুর গ্রামের নেছার উদ্দিন এবং অন্য নিহতরা হলেন ভান্ডারিয়ার হাসেম তালুকদার, কেরামত আলী, হারুন হাওলাদার, আঃ লতিফ, হাসেম খাঁ প্রমুখ।
বাগেরহাটের কুখ্যাত রাজাকার রজ্জব আলী ফকির এর নেতৃত্বে লঞ্চ যোগে একদল রাজাকার জুন মাসের শেষ দিকে লক্ষ্মীখালীতে আসে। সাধুর বাড়িসহ সম্ভ্রান্ত ধনী হিন্দু বাড়ি লুট, অগ্নিসংযোগ, হিন্দু হত্যা ও ধর্ষণের উদ্দেশ্যে অত:পর লক্ষ্মীখালী নিধনজজ্ঞ অপারেশনের পর লঞ্চ যোগেই ভোলা নদীতে আসে এবং দক্ষিণ দিকে যায়। ধানসাগর রাজাপুর গ্রামে নেমে লুটপাট করে ধ্বংসলীলা চালায়। নির্বাচারে হত্যা করে নিরস্ত্র সর্বানন্দ রায়কে এর পর সতীশ মন্ডলকে হত্যা করে এবং অনেক লোক ধরে মারপিট করে। মাঠে কাজ করা কৃষক কুঞ্জবিহারী শিকদার, মহেন্দ্র নাথ হালদার, সুলতান মুন্সী প্রমুখ লোকজনকে হত্যা করে চলে যায়। রমজান মাসের পহেলা দিন পাক হানাদার বাহিনী গানবোট থেকে বগী গাবতলা অবতরন করে গণহত্যা চালায়। গণহত্যার শিকর হিঙ্গূল তালুকদার বগী, আপ্তার তালুকদার, সোহরাব হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, গাবতলা মোন্তাজ মোল্লা। এর আগে রাজাকাররা সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের রজ্জব আলী খানের দুই পুত্র নুর মোহাম্মদ খান ও আমির আলী খান কে হত্যা করে। এছাড়া জুলাই মাসে খোন্তাকাটার মাওলানা এ.কে.এম. ইউসুফ এর গ্রামের বাড়ি খোন্তাকাটা, রাজৈর, মঠেরপাড় গ্রামের একমাত্র তৎকালীন আওয়ামীলীগ পরিবার খলিফা বাড়ী, ইউসুফ মাওলানার প্রতিবেশী বলা চলে। ইউসুফ মাওলানার নির্দেশে রাজাকার বাহিনী সহোদর দুই ভাইকে জবাই করে হত্যা করে। এরা হলেন মোঃ চান মিয়া খলিফা, আঃ রশিদ খলিফা। যে সকল রাজাকাররা হত্যাকান্ড ঘটায় তার হলেন রাজাকার লুৎফার রহমান, রাজাকার আঃ আউয়াল, রাজাকার আনছার মুন্সী, রাজাকার জহুর হোসেন, রাজাকার আঃ রব গাজী মঠেরপাড়, রাজাকার মোফাজ্জেল হোসেন প্রমুখ।
যে স্থানগুলোতে হানাদার রাজাকার আল-বদর মানবতার শত্রুরা গণহত্যা ঘটায় সেই সব স্থানগুলি বধ্যভূমি হিসাবে চিহ্নিত। শরণখোলার এই বধ্যমূমিগুলোই অখ্যাত।
পাকিস্তানী হানাদার ও তাদের দোসরদের নির্যাতন কেন্দ্র ও বন্দি শিবিরঃ
শরণখোলা উপজেলায় রায়েন্দা বাজারে পাকিস্তানী হানাদার ও তাদের দোসরদের দুইটি ক্যাম্প ছিল। শত্রু বাহিনীরা মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামি লোকজন ধরে এনে ওদের অবস্থানরত ক্যাম্পে নির্ধারিত বন্দীশালায় বন্দিদের আটক রেখে নির্যাতন করতো। হানাদারদের নির্যাতন কেন্দ্র থেকে মৃত্যুর হাত থেকে পালাইয়া ছুটে আসা লোকজনের মুখে ওদের বন্দি নির্যাতনের বিভৎস বর্ণনা শুনা যেত, হানাদার ও তাদের দোসরদের হাতে বন্দি হওয়া মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর হক মৃত্যুর দুয়ার থেকে ছুটে এসে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছিল তা শুনে গা শিহ্রিত হয়ে উঠে ছিল। দুইটা ক্যাম্পেই বন্দি ও নির্যাতন কেন্দ্র ছিল বিশেষ করে দোতালা দালানে ক্যাম্প থাকায় নিচতলায় অন্ধকার কুঠিরে বন্দি ও নির্যাতন কেন্দ্র ছিল থানা ক্যাম্প তো হাজতখানা ছিলই।
বধ্য ভূমি ও গণকবরঃ
৭১-এ পাকিস্তানী হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর বাহিনী মানবতার শত্রুরা শরণখোলা উপজেলায় যে সকল গ্রামে ঢুকে নিরহ লোকজন ধরে হাত পা বেঁধে এক জায়গায় জড়ো করে গুলি ও জবাই করে হত্যা করে। ঐ জায়গাটি বধ্যভূমি- শরণখোলা উপজেলা অঞ্চলে সুন্দরবনের জিয়া উদ্দিনের মুক্তিবাহিনীর চারন ভূমি, সেহেতু শত্রুরা গ্রামে বেশীক্ষন স্থির থাকতো না। দ্রুত জটিকা হামলা চালাইয়া পালাইত। কাজেই গণকবর দেয়ার সুযোগ হতো না লাশ নদীতে ও খালে ভাসাইয়া দিত, পরে গণহত্যার শিকার লাশের আত্মীয় স্বজনরা খুঁজে যে লাশ পাইত তা কবর দিতো।
বধ্যভূমি ও গণকবরঃ
শরণখোলা উপজেলায় বধ্যভূমি (গণ হত্যার এলাকা) বগী, গাবতলা ইং ২১ অক্টোবর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বলেশ্বর নদীতে আসা গানবোট থেকে ঐ এলাকায় উঠে গ্রামে লুট পাট অগ্নি সংযোগ, নারী ধর্ষণ নরকীয় ঘটনা ঘটায়। জমিতে কাজ করারত কৃষক সহ বেশ কয়জন নিরীহ মানুষ হত্যা করে যে জায়গাটি মহান মুক্তিযুদ্ধে শত্রুর বুলেটে গণ হত্যা বধ্যভূমি হিসেবে ক্ষত স্মৃতি বহন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে। অবশ্য এই লাশ গুলি শত্রুরা চলে গেলে আত্মীয় স্বজন নিজ নিজ বাড়ীতে কবর দেয়।
৩নং রায়েন্দা ইউনিয়নিঃ রাজেশ্বর লাকুড়তলা গ্রামে ঢুকে হানাদার বাহিনী নিরহ বেশ কয়েকজন লোকজনকে হত্যা করে এদের লাশ গুলি নদীতে ভাসিয়ে দেয়। এই জায়গা দুইটি দুই গ্রামে বধ্য ভূমি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগের স্মৃতি বহন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে।
১নং ধানসাগর ইউনিয়নঃ উত্তর রাজাপুর গ্রামে হানাদার বাহিনীর বেশ কিছু লোক জন হত্যা করে এ জায়গাটি মহান মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগের ইতিহাসে ক্ষতচিহ্ন হিসেবে স্মৃতি বহন করে এই রাজাপুর বধ্যভূমি। ধানসাগর গণ হত্যার স্বীকার নিরহ লোকজন এই বধ্যভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আত্মত্যাগের ক্ষত চিহ্ন হিসেবে স্মৃতি বহন করে।
বধ্যভূমি এলাকা গুলিঃ
বগী, গাবতলা বধ্যভুমি, রাজেশ্বর, লাকুড়তলা বধ্যভূমি, দক্ষিন রাজাপুর/ উত্তর রাজাপুর বধ্যভূমি, বাধাল গ্রামের পোল ঘাটা বধ্যভূমি, মঠেরপাড় গ্রামের বধ্যভূমি, রায়েন্দা বাজার বলেশ্বর নদীর পরানো স্টীমার ঘাট বধ্যভূমি।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আঞ্চলিক বা থানা কমান্ডার ও অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নামঃ
মাস্টার মফিজুল হক (আওয়ামীলীগ নেতা), শামছুল আলম তালুকদার (ভাসানী ন্যাপ নেতা), মোজাম্মেল হোসেন (আওয়ামীলীগ নেতা), এম.এ কাদের (ভাসানী ন্যাপ নেতা), ডাঃ মোসলেম উদ্দিন জোমাদ্দার আওয়ামীলীগ নেতা), নজরম্নল ইসলাম লাল (ভাসানী ন্যাপ নেতা), এম আফজাল হুসাইন (ভাসানী ন্যাপ নেতা), আঃ ছত্তর চাপরাশি (আওয়ামীলীগ নেতা), আশ্রাফুল হক গাজী (আওয়ামীলীগ নেতা), ইসাহাক আলী সরদার (আওয়ামীলীগ নেতা), আজাহার আলী বড় মিয়া (আওয়ামীলীগ নেতা), ইসলামাইল হোসেন খলিফা (আওয়ামীলীগ নেতা)।
ছাত্র ও যুব নেতা হিসেবেঃ গোলাম মোস্তফা তালুকদার (ছাত্রলীগ), হেমায়েত উদ্দিন বাদশা (ছাত্র ইউনিয়ন), এ.কে.এম মনিরুজ্জামান বাবুল (ছাত্রলীগ)।
মুক্তিযুদ্ধে শরণখোলা উপজেলা বা থানা এলাকায় প্রাথমিক পর্যায় আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে ঃ শহীদ আনোয়ার হোসেন (সেনা সদস্য), আঃ আজিজ ফুল মিয়া (সেনা সদস্য), আঃ গফ্ফার (সুবেদার, সেনা সদস্য)।
উপজেলায় স্বাধীনতা বিরোধী দল বা সংগঠন , শান্তি কমিটি, পাকিসত্মানী বাহিনীর সহযোগি ব্যক্তি বা সংগঠন এবং তাদের তৎপরতাঃ
শরণখোলা উপজেলায় স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগ। বিশেষ করে এই দুই দল ও ছাত্র সংগঠন ছাত্র সংঘ (বর্তমান ছাত্র শিবির) এবং মুসলিম লীগের ছাত্র সংগঠন এন.এস.এফ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকায় ছিল। এদের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের নিয়েই শামিত্ম কমিটি (পিস কমিটি) গঠন করা হয়। এদের নেতৃত্বে পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনীদের বর্বরচিত কর্মকান্ডে সহযোগিতা ও অংশ গ্রহণ করে। মূলত এই দুই দলের নেতা কর্মিরা রাজাকার আল-বদর, আলশামছ বাহিনীতে যোগ দিয়ে অস্ত্র হাতে মুক্তিবাহিনীর বিরম্নদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। গ্রামে গঞ্জে অগ্নি সংযোগ লুটপাট, নারী নির্যাতন চালায় পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনীদের নিয়ে, এবং পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনীদের পথ দেখায়।
মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের নাম ও পরিচয়ঃ
* মৃত: এ.কে.এম ইউসুফ,
জামায়াত ইসলামী, পিতা- মৃত: আজিমদ্দিন, গ্রাম- রাজৈর, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* মৃত: আঃ রশিদ তালুকদার
চেয়ারম্যান পিস কমিটি, পিতা- মৃত: মোবারক আলী তালুকদার, গ্রাম- মালিয়া, ডাকঘর- জনতা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* মৃত: আজিজ মাস্টার
জামায়াত ইসলামী নেতা, পিতা- মোতাহার মুন্সী, গ্রাম-মঠেরপাড়, ডাকঘর-জানেরপাড়, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* মৃত: আঃ লতিফ পঞ্চায়েত
মুসলিমলীগ নেতা, পিতা- নাদের আলী পঞ্চায়েত, গ্রাম- আমড়াগাছিয়া, ডাকঘর- আমড়াগাছিয়া, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* মাওলানা হাবিবুর রহমান মোল্লা
পিতা- মৃত: ............................ , গ্রাম- গোলবুনিয়া, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* হাজী আঃ ওহাব খান,
পিতা- মৃত: তাজেল আলী খান, গ্রাম- রায়েন্দা বাজার, ডাকঘর- রাযেন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* মোঃ নান্না তালুকদার
এনএসএফ নেতা, পিতা- মৃত: মৌলভী আবুল হাসেম তালুকদার, গ্রাম- গোলবুনিয়া, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* মোদাচ্ছের হোসেন
ছাত্র সংঘ নেতা, পিতা- মৃত: ..............., গ্রাম- আমড়াগাছিয়া, ডাকঘর- আমড়াগাছিয়া, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* নুর মোহম্মদ তালুকদার
ছাত্র সংঘ, পিতা- আঃ ছত্তার তালুকদার, ডাকঘর- রায়েন্দা, গ্রাম- কদমতলা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট। বর্তমান অবস্থানঃ খুলনা।
* আঃ হামিদ মৌলভী
পিতা- মৃত: নজর আলী, গ্রাম- খাদা, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* আঃ ছত্তার তালুকদার
পিতা- .........................., গ্রাম- কদমতলা, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
* আবুল হোসেন শিকদার
এনএসএফ নেতা, পিতা- মৃত: নাজেম আলী শিকদার, গ্রাম- উত্তর কদমতলা, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
শরণখোলা উপজেলা এলাকায় পাকিসত্মানী হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার বাহিনীর বিরম্নদ্ধের যুদ্ধের বিবরণঃ
১৯৭১ সালের ১১ জুলাই সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী ক্যাডেট অফিসার আনোযার হোসেনের নেতৃত্বে ৪৭ জন মুক্তিবাহিনীর দল রায়েন্দা রাজাকার ক্যাম্প আক্রমন- এই যুদ্ধে আঞ্চলিক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন সহ আচমত আলী, মোঃ ইসমাইল শহীদ হয়।
১৯৭১ সালের ১৮ আগস্ট সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী সব-সেক্টর কমান্ডার মেজর অব: জিয়া উদ্দিনের পরিকল্পনায় শেলা নদীতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বহনকারি খুলনা যাওযার পথে রকেট আক্রমন করা হয়। রকেটের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ এবং রকেটে থাকা পাকিস্তানী হানাদার নিহত ও আহত হয়।
১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী মোঃ হারুন অর-রশিদ খাঁন এর নেতৃত্বে শৌলা নদীতে টহলরত পাঞ্জাবী গানবোট আক্রমন এবং পাঞ্জাবী গানবোট ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পিছু হটে যায়।
১৯৭১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীর সব-সেক্টর কমান্ডার মেজর অব: জিয়া উদ্দিনের নেতৃত্বে শরণখোলা ভোলা নদীতে সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলার উদ্দেশ্যে আসা ছয়টি পাঞ্জাবী গানবোর্ট প্রতিরোধ যুদ্ধ। যুদ্ধে পাঞ্জাবী গান বোট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পিছু হটে।
১৯৭১ সালের ১ অক্টোবর সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীর সব-সেক্টর হেড কোয়াটার সহ সমস্ত আস্তানায় পাকিস্তানী যৌথ বাহিনী ও রাজাকার সহ সপ্তাহধিক ব্যাপী সাড়াসি আক্রমণ- মেজর অব: জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে সুন্দরবন মুক্তিবাহিনীরা প্রতিহত ও আত্মরক্ষায় সক্ষম হয়।
১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর সুন্দরবন অঞ্চল মুক্তিবাহিনীর অগ্রবর্তি ঘাটি বগী বন্দর, পাঞ্জাবী গানবোটের হামলা প্রতিরোধ। নূরম্নল ইসলাম ক্যাশিয়ার ও শহীদ আলাউদ্দিন (হাবিলদার, সেনা সদস্য) নেতৃত্বে।
১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর এম. আফজাল হুসাইনের নেতৃত্বে সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী সুপতি নদী মোহনায় পাঞ্জাবী গান বোট প্রতিরোধ করা হয়। সুপাতি নদী মহনায় বয়া উত্তোলন যাতে পাঞ্জাবী গানবোট চলাচলে বিঘ্ন হয়।
১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী কর্তৃক- শরণখোলা / মোড়েলগঞ্জ এর ক্যাম্পের পাঞ্জাবী/ রাজাকার/আল-বদর শত্রম্ন বাহিনী যৌথভাবে নিধনযজ্ঞে হামলা কারি শত্রম্নবাহিনীদের সুন্দরবন মুক্তি বাহিনীরা দক্ষিণ রাজাপুর, উত্তর রাজাপুর, ধানসাগর এলাকায় ঘেরাউ করে বেশ কিছু শত্রম্ন নিহত এবং দুই জন রাজাকার ও একজন পাঞ্জাবী গ্রেফতার হন। মুক্তিযোদ্ধা আঃ খালেক বেপারী ও আঃ মালেক জোমাদ্দার সহ অল্প কয়জন মুক্তিবাহিনীর বীরত্ব ও সাহসিকতা ছিল অভিস্মরনীয়।
১৯৭১ সালে সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর অব: জিয়া উদ্দিনের নেতৃত্বে শরণখোলা রায়েন্দা রাজাকার বাহিনীর বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ চুড়ামত্ম বিজয়। শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দার রনাঙ্গনে সম্মূখ যুদ্ধে শহীদ হন আসাদ, টিপু সুলতান, আলাউদ্দিন, গুরুপদ, আলতাফ। গুরুপদ ছাড়া অন্য চার শহীদের কবর স্মৃতিসৌধ রায়েন্দা পুকুর পাড়ে শহীদ মিনার চত্তর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আত্মত্যাগের ক্ষত চিহ্ন।
উপজেলায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগি রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনী গঠন ও তৎপরতাঃ
শরণখোলা উপজেলায় জামায়াত ইসলামী দলের নেতা (শরণখোলায় জন্ম) একেএম ইউসুফের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ইং ২৮ মে ১৯৭১ তারিখে খুলনায় আনসার ক্যাম্পে জামায়াত ইসলামী ও ছাত্র সংঘের নেতা কর্মিদের নিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠন হয় এরই একটি দল শরণখোলায় আসে ইং ১ জুন ১৯৭১ তারিখ । এসেই শরণখোলার রায়েন্দা বাজারের থানায় ক্যাম্প করে লুটপাট, অগ্নি সংযোগ, নারী ধর্ষণ, হত্যাকান্ড শুরু করে। মানবতা বিরোধী কর্মকান্ড চালায়। মাঝে মাঝে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আসত। কিছুদিন রাজাকারদের সহযোগিতায় নরকীয় কার্যক্রম চালাইয়া চলে যেত।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও পরিচয়ঃ
শহীদ আনোয়ার হোসেন খান(অফিসার ক্যাডেট, সেনা সদস্য)
পিতা- মৃত: আলেপ খান, গ্রাম- উত্তর সাউথখালী, ডাকঘর- তাফালবাড়ী, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
শহীদ ইসমাইল হোসেন
পিতা- মৃত: আফেজ উদ্দিন, গ্রাম- দক্ষিণ রাজাপুর, ডাকঘর- আর. শরণখোলা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
শহীদ আচমত আলী
পিতা- মৃত: , গ্রাম- ডাকঘর- উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
শহীদ আলতাফ হোসেন শিকদার
পিতা- মৃত: আজাহার শিকদার, গ্রাম- রাজাপুর, ডাকঘর- রাজাপুর, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
শহীদ আলাউদ্দিন(হাবিলদার, সেনা সদস্য), বরগুনা।
শহীদ আসাদ, কচুয়া, বাগেরহাট।
শহীদ টিপু সুলতান, বরিশাল।
শহীদ গুরু পদ,রামপাল, বাগেরহাট।
মুক্তিযুদ্ধ/ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ, ভাস্কর্য, স্মৃতিফলক/ নামকরণ (সড়ক, স্থান, প্রতিষ্ঠান)ঃ
শরণখোলা উপজেলায় রায়েন্দা চুড়ামত্ম বিজয়ী সম্মূখ যুদ্ধে শহীদ ৫ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ৪ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আলাউদ্দিন, শহীদ আসাদ, শহীদ টিপু সুলতান, শহীদ আলতাফ হোসেন শিকদার এ চারজনের কবর স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। শহীদ আনোয়ার হোসেন, শহীদ আলাউদ্দিন, শহীদ আসাদ, শহীদ টিপু সুলতান, শহীদ আলতাফ হোসেন শিকদার এর নামে সড়ক নামকরন করা হয়েছে। ৭১ বিজয়ত্তোর শরণখোলা থানাকে আসাদ নগর থানা নামকরণ করা হয়েছিল।
উপজেলা হানাদার মুক্ত হবার দিনঃ
১৯৭১ সালের ০৭ ডিসেম্বর শরণখোলা উপজেলা এলাকা হানাদার মুক্ত হয়ে চুড়ামত্ম বিজয় ও লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর পরেও স্থানীয় ও কতিপয় রাজাকার আল-বদর বাহিনীর একটি দল পালাইতে না পেরে অস্ত্র সহ রায়েন্দা বাজার আওয়ামীলীগ নেতা নাছির উদ্দিন আকন এর দোতলা দালানে মুক্তিবাহিনীকর্তৃক অবরম্নদ্ধ থাকে। যাদের গ্রেফতার করতে মুক্তিবাহিনীর রক্তঝরাতে হয়েছে। শহীদ হয়েছে ৫জন। শত্রুদের পরাভূত ও গ্রেফতার করে বাগে আনাতে সময় লেগেছে ১৮ই ডিম্বের পর্যন্ত।
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা/রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকারঃ
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হোসেন
বর্তমান চেয়ারম্যান, সাউথখালী ইউপি,
সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
যুদ্ধকালীন কমান্ডার, নৈহাটী ইউথ ক্যাম্প ইনচার্জ,
বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী।
সাক্ষাতের তারিখঃ ১০/০৭/২০১৪ ইং। দুপুরঃ ২.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাসবভন, সাউথখালী।
মোবাইল- ০১৭৪৮-৯৮৬৬১১
বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ কাদের
সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
যুদ্ধকালীন কমান্ডার, সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী
সাক্ষাতের তারিখঃ ২১/০৭/২০১৪ ইং। বিকালঃ ৩.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাসবভন, রায়েন্দা বাজার।
মোবাইল- ০১৭১৫৫৯৫২৫৫
বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম লাল
সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
যুদ্ধকালীন কমান্ডার, সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী
সাক্ষাতের তারিখঃ ১৮/০৭/২০১৪ ইং। বিকালঃ ৪.৩০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাসবভন, আমড়াগাছিয়া।
মোবাইল- ০১৭১৮-৮৩৩৯৬৩
বীর মুক্তিযোদ্ধা এম আফজাল হুসাইন
সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
যুদ্ধকালীন কমান্ডার, সুন্দরবন হয়লাতলা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প
সুন্দরবন সাব-সেক্টর অঞ্চল,
বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী
সাক্ষাতের তারিখঃ ১২/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ দুপুর ২.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ ঢাকা আই.ই.বি মিলনায়ত, ঢাকা।
মোবাইল- ০১৭২১৭৭৮২৯২
বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম ক্যাশিয়ার
যুদ্ধকালীন কমান্ডার, সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী,
সাক্ষাতের তারিখঃ ২৩/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ দুপুর ১.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল- ০১৭২৭২৯০৯৭৮
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা একেএম মনিরুজ্জামান বাবুল
সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
সাক্ষাতের তারিখঃ ১২/০৭/২০১৪ ইং
মোবাইল- ০১৭৩৩-৬০৬০০০
বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বাদশা
যুদ্ধকালীন কমান্ডার, সুন্দরবন সাব-সেক্টর অঞ্চল,
সুন্দরবন মুক্তিবাহিনী, বর্তমান ডেপুটি কমান্ডার,
শরণখোলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
সাক্ষাতের তারিখঃ ০৮/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ সকল ১০.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল-
বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সামছুর রহমান
সুন্দরবন অঞ্চল যুদ্ধকালীন কমান্ডার
বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী,
সাক্ষাতের তারিখঃ ০৩/০৮/২০১৪ ইং। সময়ঃ সকল ১০.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল- ০১৭১১৩৯৩৩০২
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী শিকদার
সহকারী কমান্ডার (পুর্ণবাসন), শরণখোলা উপজেলা কমান্ড,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
সাক্ষাতের তারিখঃ ২৩/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ সকল ১১.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল- ০১৭২০৯০১৩০৩
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন খলিফা
সাক্ষাতের তারিখঃ ২০/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ সকল ১১.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল-০১৭২৪-৭৮৮৫৬০
বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর-রশিদ খান
সহকারী কমান্ডার (সাংগঠনিক), শরণখোলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
সাক্ষাতের তারিখঃ ২০/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ দুপুর ১.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল- ০১৭২৮১৬২৩৯১
বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেক জোমাদ্দার
কার্যকরী সদস্য, শরণখোলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
সাক্ষাতের তারিখঃ ২৩/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ সকাল ১০.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল- ০১৯৩৭২১৩৪০৯
বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ খালেক খান
কমান্ডার, শরণখোলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
সাক্ষাতের তারিখঃ ১২/০৭/২০১৪ ইং। সময়ঃ সকল ১০.০০ ঘটিকা।
স্থানঃ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, শরণখোলা।
মোবাইল- ০১৯৪১০১২৬০২
সর্বশেষ ০৫/০৮/২০১৪ তারিখ ফোন আলাপে সাক্ষাতকার নিয়েছি নবম সেক্টর সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর অব: জিয়াউদ্দিন- এর। ফোন নম্বর- ০১৭১১-৪৩৯৫৫৭, ০১৫৫৮৪৮০৪৫২।
গবেষকের নামঃ
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর জববার
সহকারী কমান্ডার (দপ্তর), শরণখোলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড,
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
ঠিকানাঃ গ্রাম- রাজৈর, ডাকঘর- রায়েন্দা, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট।
ফোন নং- ০১৭৩২-৮৯৮৭২৩
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস